হজ্জ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এই ইবাদতটি শুধু মাত্র সেই সব ব্যক্তিদের জন্য ফরজ যার এই পরিমান অর্থ আছে, যা দিয়ে তার সংসারের পুরো এক থেকে দেড় মাস খরচ চালিয়ে নিয়ে; সে হজ্জের জন্য অর্থ বের করতে পারে। সহজ কথায় অর্থশালীদের জন্য হজ্জ ফরজ। তবে হজ্জ ব্যবস্থাপনা ভুল বাছায় করার কারণে, হজ্জে গিয়ে অনেকেই বাড়তী কোষ্ট ভোগ করে থাকেন যা মোটেও কাম্য না।

সরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা vs. বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা

হজ্জে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অবাঞ্ছিত / অপ্রত্যাশিত কষ্ট এড়াতে হজ্জের জন্য সরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা vs. বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা এই দুইয়ের পার্থক্য আমাদের জেনে থাকা দরকার।

অনেকেই হজ্জে থেকে এসে তাদের ভোগান্তির কথা গুলো প্রকাশ করতে চাননা। এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে; তবে আমি মনে করি, এর মূল কারন হচ্ছে ব্যবসায়িক মোয়াল্লেম। ব্যবসায়িক মোয়াল্লেম শুধু আমাদের দেশেই নেই, এটি রয়েছে ভারত এবং পাকিস্থানেও। ভারত, পাকিস্থান আর বাংলাদেশ ছাড়া আর অন্য কোন দেশে আছে কিনা তা জানা নেই। কারণ আমার অভিজ্ঞতাই এই তিনটি দেশকেই পেয়েছি।

হাজ্জিদের নিয়ে ব্যবসায় লাভ লোকসান হিসেব কারী এই সব মোয়াল্লেম গুলো হজ্জ থেকে ফিরে আসার পূর্বে হাজ্জিদের কাছে তাদের গাফলতীর জন্য ক্ষমা চেয়ে নেওয়া এবং বাড়তী কোন কষ্টের কথা দেশে গিয়ে আলোচনা না করার তালিম দিতে ভুল করে না। যার ফলে পরবর্তীতে যে সকল সম্মানিত ব্যক্তি গুলো হজ্জ করার জন্য যেতে চান তারা সঠিক হজ্জ ব্যবস্থাপনা বাছায় করতে ভুল করেন। আর তাই আমি মনে করি, হজ্জ ব্যবস্থাপনার গুলোর পার্থক্য পরবর্তী সেই সকল ব্যক্তিদের জেনে থাকা দরকার যাতে করে সঠিক ব্যবস্থাপনা বাছায় করে হজ্জে যেতে পারেন এবং সুষ্ঠভাবে হজ্জ সম্পূর্ণ করতে পারেন।

হজ্জের জন্য দুইটি ব্যবস্থাপনা চালু আছে।
১। বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা
২। সরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা

বেসরকারি ব্যবস্থাপনা

সরকারি অনুমোদিত বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিকে হজ্জ লাইসেন্স প্রদান করা আছে। যে সকল ট্রাভেল এজেন্সিদের এই লাইসেন্স আছে সেই সকল ট্রাভেল এজেন্সি হজ্জের জন্য লোক পাঠাতে পারেন। আর এই পদ্ধতিকেই বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা বলা হয়। আমরা অনেকেই দেখে থাকবো নিজ নিজ এলাকাই বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় এমন অনেক লোক আছে যাদেরকে মোয়াল্লেম বলা হয়ে থাকে, যারা আপনাকে হজ্জে নিয়ে যাবার জন্য চেষ্টা করতে থাকে এরাই সাধারনত বেসরকারি ব্যবস্থাপনার মোয়াল্লেম। কারন সাধারনত সরকারি ব্যবস্থাপনার কোন মোয়াল্লেম এই কাজ করে থাকেন না।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনার সুবিধা

বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা -তে সুবিধা এতটা বিশাল নই যে আপনার পড়তে খুব সমস্যা হবে। বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা -তে একটা সুবিধা হচ্ছে আপনি নিশ্চিত সহকারে একজন মোয়াল্লেম বা গাইড পাবেন। আর সেইটা আপনার পরিচিত মোয়াল্লেমটিই হোক বা আপনার কাফেলার অন্য কোন মোয়াল্লেমই হোক। এই ছাড়া দ্বিতীয় কোন সুবিধা পাবার আশা মোটেও করবেন না। কারন বেশি আশা করলে সেই আশা অনুযায়ি ভরসা না পাইলে বেশি কষ্ট পাবার সম্ভাবনা থাকে।

বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনার অসুবিধা সমূহ

থাকার ক্ষেত্রে অসুবিধা

আপনার থাকার জায়গা হবে দুই রকম। প্রথমতো, হয় আপনি মক্কাই যেই জায়গায় প্রথমে উঠবেন সেই জায়গায় শেষ পর্যন্ত থেকে যাবেন। এমন ক্ষেত্রে আপনার থাকার জায়গাটি হবে নিম্ন মানের। যা আপনার সাথে প্রতারনা করা হবে। কারন আপনার কাছে তারাতো টাকা কম নেয় নাই যে, এমন পরিবেশে রাখবে। তারা টাকা ঠিকই নিয়েছে শুধু মাত্র প্রফিট বেশি করার জন্য নিম্নমানের হোটেল বা বাসাতে রাখবে।

দ্বিতীয়তো, আপনি মক্কাই যে জায়গায় প্রথমে উঠবেন মদিনা থেকে আসার পর তা পরিবর্তন হবে। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ফেতরা। এই ক্ষেত্রে আপনি প্রথম টার্মে হারাম শরিফের কাছে অবস্থান করলে দ্বিতীয় টার্মে আপনাকে দূরে নিয়ে চলে যাবে। এতটাই দুরে যে হারাম শরিফে এসে নামাজ পড়াটাই হয়তো আপনার হবে না; সহজ কোন ব্যবস্থা না থাকাই। আর প্রথম দিকে নিম্ন পরিবেশে থাকলে পারের দিকে একটু ভাল হটেলে নিবে, অথবা প্রথম দিকে একটু ভাল হটেলে থাকলে পরের টার্মে নিম্ন মানের হটেলে নিবে।

মেনু বিহীন খাবার

খাবারের মান হবে নিম্ন মানের। আপনাকে যে খাবার দেওয়ার কথা সেই ধরনের খাবার আপনি পাবেন না। হাজীদের কি খাবার পরিবেশন করা হবে তার মেনু অনেক আগেই প্রস্তুত হয়ে থাকে যা আপনি হয়তো জানতেই পারবেন না আপনাদের মেনুতে কি কি খাবার আছে। কারন বেসরকারি মোয়াল্লেম গুলো আপনাকে এই ব্যপারে কিছুই জানাবেনা। কারন একটাই প্রফিটের প্রতিযোগিতা। আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, মেনু সম্পর্কে যদি জানতেই না পারা যায় তবে আমি কেমন করে জানলাম যে, খাবার মেনু থাকে? বলতে পারেন মোয়াল্লেমের দূর্ভাগ্যবশ্বত আমার হাতে এই মেনুটি পড়ে গিয়েছিলো। যাই হোক সেই প্রসঙ্গ বাদ দেয়।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনার অসুবিধা, সহজ ভাষাই বলতে গেলে বলতে হয় মোয়াল্লেমদের কথার সাথে কাজের কোন মিল নাই।

লস্ট এন্ড প্রফিট

প্যারাটির হেডটি ইংলিশ দিলাম তার জন্য দু:ক্ষিত। কিন্তু আমি মনে করলাম বিষয়টি এমনই যে, এই হেডিংটিই বেশি যুক্তি যুক্ত। বেসরকারির অধিকাংশ বা প্রাই সকল মোয়াল্লেম গুলোই লস্ট এন্ড প্রফিট এর বিষয়টি মাথাই রেখে চলাফেরা করা। আপনি যদি কোথাও ভিজিট করার জন্য মোয়াল্লেমদের গাইড হিসেবে নিয়ে যেতে চান তবে তারা আপনার গাইড হিসেবে যাবার ক্ষেত্রে লস্ট এন্ড প্রফিটের হিসেব করে সম্মতি জ্ঞাপন করবে। যেমন একটি ছোট্ট উদাহারন দিচ্ছি।

মনে করেন আপনি তায়েফ ঘুরতে যাবেন বলে স্থির করলেন। এখন মোয়াল্লেম খোজ খবর নিয়ে জেনে নিবেন কতজন তায়েফ ঘুরতে আগ্রহী আছেন সেই অনুযায়ী সে গাড়ীর ব্যবস্থা করবে। এখন আপনকে আপনার চাওয়া অনুযায়ী তারা ঘুরাতে পারবে না লস্ট এন্ড প্রফিটের স্বীমাবদ্ধতার কারনে। তবে তারা কয়েকটি উল্লেক্ষ যোগ্য জায়গা দেখানোর চেষ্টা করবেন, কিন্তু বাড়তী কোন জায়গা দেখার কথা বল্লেও আপনি তা দেখতে পাবেন না (বাড়তী বলতে আসলে যে জায়গাটাও ভিজিট করা দরকার ছিলো)। যাইহোক, তারপরও তারা আপনাকে সন্তুষ্ট করার মত জায়গা দেখানোর চেষ্টা করবেন। কিন্তু এর মধ্যে তাদের মূল বিষয় অর্থাৎ লস্ট এন্ড প্রফিট বিষয়টি মাথায় রেখে আপনাকে তায়েফ ঘুরাবেন।

মোয়াল্লেমগুলো তায়েফ যাবার আগেই গাড়ীর সাথে ভাড়া এবং কোন কোন জায়গা যাবে তা ঠিক হয়ে যায়। তারা কত টাকাই গাড়ী ঠিক করেছে তা আপনি জানতেই পারবেন না। গাড়ী গুলো সাদারনত ৩০০ রিয়েল এর মধ্যে ঠিক করে যদি ৭ সিটের হয় আর ৪ সিটের হলে ২০০ তেই হয়ে যায় কিন্তু তারা ৭ সিটের গাড়ীতে ৯ জন বসানোর মত বাজে কাজ করতে পারেন। এটা করতে পারেন প্রফিট বেশি বাড়ানোর জন্য। এখন গাড়ী ভাড়ার জন্য আপনার কাছে ৬০ থেকে ১০০ রিয়েল করে নিতে পারে, যা দু:খজনক হলেও সত্য।

আপনি যেখানেই যেতে চাবেন ঠিক সেখানেই এমন আচারন পাবেন। মোট কথা যেখানে প্রফিট হবে না সেখানে তাদের গুরত্ব খুবই কম বা একি বারে নেই। আর যেখানে প্রফিট সেখানে তারা অনেক বেশি আগ্রহ দেখাবে।

কুরবানি

প্রায় সব মুয়াল্লেম কুরবানি দেওয়ার জন্য অনেক অনেক বেশি আগ্রহ দেখাবে। অনেকেই জোরাজুরি করবে। কারন এখানে বলতেই গেলে পুরাটাই তাদের প্রফিট। কারন তারা কুরবানি না করে কুরবানির টাকা পুরোটাই নিজেদের পকেটে রেখে দেই। আর আপনি যদি মোয়াল্লেম দ্বারা করবানি করার জন্য এই শর্তে রাজি হন যে, আপনি আপনার টা নিজের হাতে কুরবানি দিবেন সেই ক্ষেত্রে আপনাকে “হ্যাঁ” বলতে পারে। অর্থাৎ দুই একজনের টাকা পকেটে নাও ভরতে পারে, নিজে উপস্থিত থেকে করবানি করার জন্য কেউ শর্ত দিলে। তবে কুরবানির দিন ভিন্ন আচারন পেতে পারেন। মোট কথা কুরবানি নিজেই ব্যবস্থা করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন মিনাতেই আর তা সম্ভব না হলে ব্যাংকে দেওয়াটাই উত্তম। নিজ ইচ্ছেই তো দুরের কথা, ভুল করেও মোয়াল্লেমের হাতে কুরবানির টাকা দিবেন না, দিবেন না।

মিনায় অবস্থানের ক্ষেত্রে গুরুত্বহীনতা

মিনা

মিনার তাবু গুলো বিভিন্ন ব্যক্তি বা কম্পানি সৌদি সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে থাকে।তাবুর কোয়ালিটি বা সুবিধা-অসুবিধার উপর নির্ভর করে তাবু দাম নির্ধারন করা হয়। আর এই কারনে বাংলাদেশ, পাকিস্থান আর ইন্ডিয়ার লোভী মোয়াল্লেম গুলো মিনার মধ্যকার তাবু গুলো না নিয়ে মুজদালিফার অংশে যে তাবু গুলো আছে তা নিয়ে থাকে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ায় আর মিনাতে জায়গা কাভার না হওয়ায় মুজাদালিফার অংশে তাবু তৈরি করা হয়েছে। আর এই তাবু গুলোতে গাদাগাদী করে মানুষ রাখা হয় আর খাবারও নিম্ন মানের। আর এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের এক কাফেলার মোয়াল্লেমের সাথে কাথা বলেছিলাম যে, তাবু গুলো কিভাবে বন্টন হয়, আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম তাবু গুলো কি বাছায় করে নেওয়া যায়, নাকি লটারির মাধ্যমে। সে বলেছিলো লটারির মাধ্যমে। কারণ তখন পর্যন্ত জানতাম না এটি পুরোটাই লিজ সিষ্টেমে। পরে জানতে পারাই সেই মোয়াল্লেমের খুব দু:খ হয়েছিলো, তার প্রকাশ্য মিথ্যা কথার জন্য। যদিও পুরো ব্যবস্থাপনা জুড়েই তাদের মিথ্যা আর মিথ্যা।

সরকারি ব্যবস্থাপনা

এই পর্যায়ে আমরা সরকারি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করবো। সরাসরি সরকারি এজেন্টের মাধ্যমে যে ব্যবস্থাপনা তাকেই সরকারি ব্যবস্থাপনা বলা হয়। সরকারি ব্যবস্থাপনার মধ্যে ইসলামি ফাউন্ডেশন সকলের চেনা জানা একটি ব্যবস্থাপনা। এছাড়া ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং হজ অফিস, আশকোনা, ঢাকা এই সকল প্রতিষ্ঠান বা কেন্দ্রগুলি হচ্ছে সরকারি হজ্ব ব্যবস্থাপনা। সরকারি হজ্জের জন্য প্রাক-নিবন্ধন করতে চাইলে প্রাক-নিবন্ধন গাইড ফলো করতে পারেন।

এখন চলুন জেনে নেয় সরকারি ব্যবস্থাপনার সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ।

সরকারি ব্যবস্থাপনার সুবিধা সমূহ

থাকার জায়গা

সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জন্য যে ধরনের জায়গা, হোটেল এবং দূরুত্বে কথা বলা হবে মোটামুটি ঠিক সেই ধরনের জায়গা, হোটেল এবং দূরুত্বই পাবেন। আর যদি কোন বিষয়ে একটু গরমিল পান তবে সরাসরি সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ্জ মিশনে অভিযোগ দিলেই তার ফল পেয়ে যাবেন। যদি সেখানে আশা অনুরুপ ফল না পান তবে সৌদি হজ্জ মিশনে অভিযোগ করলেই তড়িত গতিতে তার ফলাফল দেখতে পাবেন। তবে সৌদি হজ্জ মিশনে যাবার দরকার হবে না আশা করি। যদি বাংলাদেশ হজ্জ মিশনে গিয়ে আপনার সমস্যার কথা বলার পর বলে থাকেন যে, সঠিক সমাধান না হলে আমরা সৌদি হজ্জ মিশনে যেতে বাধ্য হবো। এই কথা বল্লে আর কিছু করা লাগবে না, সব অটোমেটিক হয়ে যাবে।

এখানে থাকার জায়গা বা হোটেল বা দুরুত্ব কোনটাই পাল্টাবে না, যা আগে থেকে নির্ধারিত থাকে। গরমিল বলতে যে রুমে ৪ জন থাকার কথা সেখানে হয়তো ৫ জন দিয়ে দিতে চেষ্টা করে মোয়াল্লেম গুলো। কারন সরকারি মোয়াল্লেম গুলো হাজ্জিদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রফিট করতে পারে না, যেমনটা বেসরকারি মোয়াল্লেম গুলোর সুযোগ থাকে। সরকারি মোয়াল্লেম গুলো শুধু মাত্র গাইড করার জন্য পাঠানো হয়। তাই থাকার জায়গাই ব্যবপারে নিশ্চত থাকা যায় যে, যেই ধরনের হোটেলের কথা পূর্বে জানানো হবে সেই ধরনেরই হবে।

খাওয়ার ব্যবস্থা

আপনি যদি সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করে থাকেন, তবে হজ্জে থাকা অবস্থায় আপনি নিজের মতো খাবার খেতে পারবেন। কারণ, সরকারি হজ্জ ব্যবস্থায় তারা খাবারের জন্য কোন ব্যবস্থা করে থাকে না। তারা আপনার খাবারের জন্য টাকা ফেরেত দিয়ে দিবে। আপনি সেই টাকা দিয়ে আপনি আপনার নিজের মতো খেতে পারবেন। এতে অল্প খরচে বেশ ভাল মানের খাবার খেতে পারবেন যেটা বেসরকারি ব্যবস্থায় কোন ভাবেই সম্ভব নই।

কুরবানি

কুরবানি করার জন্য আপনি নিজে থেকে ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল। তবে কুরবানি করার জন্য বেসরকারি মোয়াল্লেমদের মতো এখানে সরকারি মোয়াল্লেমদের দৌরাত্ব দেখতে পাবার কথা না। তারপরও এমন কিছু দেখলে না পাত্তা দিয়ে চলবেন। আর নিজে থেকে ব্যবস্থা করায় সমস্যা মনে হলে সরাসরি ব্যংকে টাকা জমা দিয়ে দিবেন।

লস্ট এন্ড প্রফিট থেকে মুক্ত

এখানে লস্ট এন্ড প্রফিট এর ব্যবসা থেকে মুক্ত থাকবেন বলে মনে করি। এমনকি জেদ্দা বা তাইফের মতো ভ্রমন ফ্রিও পেতে পারেন। তাইফের ভ্রমনটা ফ্রিও না হতে পারে কারন এখানে বাস যাওয়াটা একটু রিস্কি হয়ে যায়। যদি ফ্রি নাও পান তবে নিজেরা টিম করে ঘুরে আসবেন। তায়েফের মতো জায়গা না দেখা একটু বোকামি হবে। বলতে পারেন আমার পক্ষ থেকে আপনাদেরকে তায়েফ যাবার দাওয়াত দিয়ে রাখলাম। সরকারিভাবে যাওয়ায় এখানে মোয়াল্লেমদের দৌরাত্ব অনেক কম থাকায় আপনি লস্ট এন্ড প্রফিটের যন্ত্রনা থেকে অনেকটা রেহায় পাবেন।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় অসুবিধা

সরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনায় একটাই অসুবিধা পাইলে পাইতে পারেন, আর তা হচ্ছে মোয়াল্লেমের অনুপস্থিতি বা খোজখবরে অবহেলা। তবে নিজেদের মধ্যে টিম করে চললে তেমন কোন অসুবিধা হওয়ার কথা না। তারপরও বেশি অসুবিধা হলে সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ্জ মিশনে অভিযোগ করলে এর সমধান পাবেন বলে আশা রাখি।

এখানে একটি কথা বলে রাখি, আমি এই পোষ্টের দ্বারা কাউকে আঘাত করতে চাইনি। কেউ যদি কোন ভাবে আঘাত পেয়ে থাকেন তবে আমাকে ক্ষামার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি শুধু এই পোষ্টটি এই কারনে করেছি যে, যারা আগামীতে হজ্জে যেতে চান তাদের জন্য এই পোষ্টটি একটি ভ্রমন নির্দেশনা হিসেবে কাজে দিতে পারে। তাতে সে সরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা বা বেসরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা যেইটাই গ্রহন করুক না কেন, তার যেন একটি ধারনা থাকে যে কোন ব্যস্থাপনা গ্রহন করলে কেমন সেবা পাবো। তাতে করে সে মেন্টালিটিভাবে পূর্ব থেকেই নিজেকে তৈরি করে রাখতে পারবে।

বি.দ্র: আপনি যদি সরকারি হজ্জ ব্যবস্থাপনা -তে যেতে ইচ্ছুক হন তবে, এ গ্রেডে যাওয়াটাই সর্বউত্তম। এ গ্রেডে যেতে একটু টাকা বেশি খরচ হবে কিন্তু সামান্য পরিমান সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন। আর সেই সাথে খুব সন্দর ও সহজে হজ্জের সময় গুলো অতিবাহিত হবে বলে আশা জ্ঞাপন করি।