ট্রেডিংয়ের জন্য সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং বা ফরেক্স ট্রেডিং হোক না কেন।

সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স বের করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন নিজস্ব প্যাটার্ন রয়েছে। যার উপর নির্ভর করে প্রত্যেকেই নিজ নিজ পদ্ধতিতে সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স এরিয়া গুলো খুজে বের করে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক সাধারন দৃষ্টিতে সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স এরিয়া গুলো।

সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স

উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন কোন কোন এরিয়াকে সাপোর্ট এবং কোন গুলোকে রেসিস্টেন্স হিসেবে ধরা হয়েছে।

যখন মার্কেট উপরের দিকে মুভ করে একটি জায়গা থেকে আবার ব্যক করে তখন মার্কেট নিচের দিকে ব্যক করার পূর্বে সর্বচ্চ যে জায়গা থেকে ব্যক করেছে তাকে রেসিস্টেন্স হিসেবে ধরা হয়।

প্রতিটি রেসিস্টেন্স এরিয়া সেলারদের অধিক উপস্থিতিকে বুঝিয়ে থাকে।

আবার অপর দিকে মার্কেট যখন মুভ করে ডাউন যেতে যেতে একটি জায়গা থেকে আবার উপরের দিকে যেতে শুরু করে তখন যে জায়গা থেকে আবার মার্কেট উপরের দিকে যেতে শুরু করে তখন সেই এরিয়াকে সাপোর্ট হিসেবে ধরা হয়।

প্রতিটি সাপোর্ট এরিয়া বাইয়ারদে অধিক উপস্থিতিকে বুঝিয়ে থাকে।

এইভাবে মার্কেট যতবার উপরে এবং নিচের দিকে যেতে থাকবে ততবারই একটি করে সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স তৈরি করতে থাকবে।

এই সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স ধরে ট্রেড করার অনেক উপায় রয়েছে। এর মধ্যে বেসিক পদ্ধতি দুইটি।

আরো পড়ুন: Leveraged token কি?

বাউন্স ট্রেড

প্রাইস যখন সাপোর্ট লেভেল ক্রস করতে ব্যর্থ হয়ে নতুন কর উপরের দিকে যেতে শুরু করে, তখন সেই পর্যায়ে বাই করবেন।

অপরদিকে প্রাইস যখন রেসিস্টেন্স লেভেল ক্রস করে উরের দিকে যেতে ব্যর্থ হয়ে আবার নতুন করে ডাউনেরে দিকে যেতে শরু করে, তখন সেই পর্যায়ে সেল করবেন।

ব্রেক আউট ট্রেড

প্রাইস যদি রেসিস্টেন্স লেভেল ব্রেক করে উপরের দিকে যেতে সমর্থ হয়, তখন সেই পর্যায়ে বাই করবেন।

অপরদিকে প্রাইস যদি সাপোর্ট লেভেল ব্রেক নিচের দিকে যেতে সমর্থ হয়, তখন সেই পর্যায়ে সেল করবেন।

বাউন্স এবং ব্রেক আউট বিষয়টি কনফিউস? সমস্যা নেই, বিস্তারিত আলোচনায় গিয়ে বিষয়টি আমরা পরিস্কার হওয়ার চেষ্টা করবো।

আরো পড়ুন: বিন্যান্স ফিউচারস্‌ ট্রেডিং গাইড

সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল

প্রথমত আমাদের জেনে রাখতে হবে যে সব সময়ই সাপোর্ট বা রেসিস্টেন্স লেভেল একই প্রাইসে হয় না।

অনেক সময়ই আপনার মনে হতে পারে যে, সাপোর্ট বা রেসিস্টেন্স লেভেল ব্রেক আউট হয়েছে। কিন্তু দেখবেন খুব দ্রুতই প্রাইস আবার সেই লেভেল থেকে ব্যক করছে, অর্থাৎ প্রাইস সেই লেভেলকে টেস্ট করে থাকে।

support-level-testing সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স

উপরের ছবিটিতে লক্ষ্য করুন। এখানে একটি সাপোর্ট লেভেলে দেখানো হয়েছে। যেখানে সাপোর্ট লেভেলের প্রাইস 1.4700, এখন এখানে আপনি একটি স্যডো দেখতে পাচ্ছেন যার দ্বারা দেখানে হয়েছে যে, মার্কেট সাপোর্ট লেভেলের নিচ পর্যন্ত, কয়েকবার গিয়েছিলো।

এখন আপনার এমন মুহুর্তে মনে হতে পারে মার্কেট সাপোর্ট লেভেল ব্রেক করেছে। কিন্তু বাস্তবে তা নই। মার্কেট সাপোর্ট লেভেলের নিচে গেলেও সাপোর্ট লেভেলের উপর এসে ক্লোজ হয়েছে। অর্থাৎ মার্কেট সেই সাপোর্ট লেভেলকে টেস্ট করেছে এবং পরবর্তীতৈ সাপোর্ট লেভেলের উপর এসে মার্কেট ক্লোজ হয়েছ।

কিভাবে বুঝবেন, সাপোর্ট বা রেসিস্টেন্স লেভেল ব্রেক করেছে?

প্রকৃত পক্ষে এই প্রশ্নের উত্তর একুইরেট দেওয়া মুশকিল। কেননা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন হয়ে থাকে যে, আপনি হয়তো ভেবেই নিবেন যে সাপোর্ট বা রেসিস্টেন্স লেভেল ব্রেক করছে। কিন্তু পরক্ষনেই দেখবেন আপনার ধারনা ভুল বলে প্রমাণিত হচ্ছে।

চলুন নিচের ছবিটির উদাহরন দিয়ে দেখা যাক বিষয়টি।

support-after-broken

উপরের ছবিতে 1.4700 হচ্ছে সাপোর্ট লেভেল। এখানে দেখা যাচ্ছে একটি বৃহত ক্যন্ডেল সাপোর্ট লেভেল ক্রস করে সাপোর্ট লেভেলের নিচে নতুন ক্যন্ডেল তৈরি করছে। এখন এই দেখে মনে করেন সাপোর্ট লেভেল ব্রেক আউট হয়েছে। আর এই দেখে আপনি যদি সেল ওর্ডার দেন, তবে আপনাকে অবশ্যই পস্তাতে হবে।

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে মার্কেট 1.4700 লেভেলের নিচে চলে গেলেও আবার পরবর্তীতে আপ হয়ে সাপোর্ট লেভেলের উপরে চলে এসেছে। আর উক্ত সাপোর্ট লেভেলকে আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী করে তুলেছে।

এই ধরনের ব্রেক আউটকে, ফলস্ ব্রেক আউট বলা হয়।

এখন আপনি এই ধরনের ফলস্ ব্রেক আউট থেকে নিজের ট্রেডকে কিভাবে রক্ষা করবেন?

যেকোন ধরনের ফলস্‌ ব্রেক আউট খুজে পেতে আপনাকে একাধিক সাপোর্ট বা রেসিস্টেন্স লেভেলকে বিবেচনা করে ড্রইং করতে হবে। এতে করে আপনি ফলস্‌ ব্রেক আউট গুলো ধরতে পারবেন।

ফলস্‌ ব্রেক আউট গুলোকে খুজে বের করার জন্য আপনি লাইন চার্ট ব্যবহার করতে পারেন। লাইন চার্টে শুধু মাত্র ক্লোজ প্রাইস গুলোকে দেখানো হয়, যেখানে ক্যন্ডেল স্টিক চার্টে হাই-লো প্রাইস গুলোকেও দেখানো হয়।

ক্যন্ডেল স্টিক চার্টে হাই-লো প্রাইস দেখার কারনে হয়তো অনেক সময় বিভ্রন্ত হয়ে যেতে পারেন।

নিম্নে লাইন চার্টটির দিকে খেয়াল করুন। যেখানে বেশ কয়েকয়টি সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল দেখানো হয়েছে।

সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স support-resistance-zones-line-chart

এখানে একটি বিষয় বলে রাখি। সাপোর্ট লেভেল প্রাইস মুভমেন্টর উপর নির্ভর করে রেসিস্টেন্সে লেভেলে পরিনত হয়। অপর দিকে রেসিস্টেন্স লেভেলও সাপোর্টে পরিনত হয়ে থাকে।

যেমন: ধরুন উপরের ছবিতে মাঝের যে সাপোর্ট লেভেলটি রয়েছে 1.2245 প্রাইসে মার্কেট যতক্ষন সেই প্রাইসের উপরে থাকবে ততক্ষন এই প্রাইসকে সাপোর্ট লেভেল ধরা হবে। কিন্তু যখন এই প্রাইস ব্রেক করে মার্কেট নিচের দিকে যেতে থাকবে তখন এই প্রাইসকে রেসিস্টেন্স প্রাইস হিসেবে ধরা হবে।

সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য

যেমনটা পূর্বেই বলেছি, সাপোর্ট লেভেল মার্কেট প্রাইস ভেদে রেসিস্টেন্স লেভেল এবং রেসিস্টেন্স লেভেল মার্কেট প্রাইস ভেদে সাপোর্ট লেভেল পরিণত হয়ে থাকে।

একটি লেভেলকে অর্থাৎ একটি সাপোর্ট লেভেলকে প্রাইস যতবার টেস্ট করব ততই সেই সাপোর্ট লেভেলটি শক্তিশালী হবে। অপরদিকে রেসিস্টেন্স লেভেলের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।

সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স লেভেল দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন: মেজর সাপোর্ট লেভেল (শক্তিশালী) এবং মাইনর সাপোর্ট লেভেল (দূর্বল)। অপরদিকে মেজর রেসিস্টেন্স লেভেল এবং মাইনর রেসিস্টেন্স লেভেল।

যদি মার্কেট কোন সাপোর্ট বা রেসিস্টেন্স লেভেল ভেঙ্গে সামনের দিকে মুভ করে, তখন মার্কেটের পরবর্তি মুভমেন্ট নির্ভর করে; সে কোন ধরনের সাপোর্ট বা রেসিস্টেন্স লেভেল ব্রেক আউট করেছে।

support-resistance-with-maj

আশা করা যায় বিষয় গুলো আপনি যত প্রাকটিস করবেন ততটাই আপনার ধারনা শক্তিশালী হবে।

এছাড়া ট্রেডিং বিষয়ে লাইভ আলোচনার জন্য বাংলাদেশ ক্রিপ্টো কমিউনিটিতে যোগ হয়ে থাকতে পারেন: https://t.me/Bangla_Cryptocurrency

সতর্কতাঃ- ফরেক্স ও ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেট অধিক ভলটালিটির কারনে ট্রেডিং করা অনেক বেশি বিপদজনক। তাই এই পোষ্টে কাউকে এই মার্কেটে ট্রেড করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে না। যদি কেউ ট্রেড করতে চাই, তবে তা সে নিজের দায়িত্বে করবে, এর জন্য এই ব্লগের কর্তৃপক্ষ দায়বদ্ধ থাকবে না।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *