ইন্টারনেট ব্যবহার করেন অথচ বিটকয়েনের নাম শুনেন নাই এমন কোন ব্যক্তি খুব কমই পাওয়া যাবে। আর এই বিটকয়েনকেই বলা হয় ক্রিপ্টোকারেন্সি। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি শুধু বিটকয়েনের মধ্যেই সীমা বদ্ধ নই। এই রমক হাজার হাজার কারেন্সি আছে মার্কেটে, যার অধিকাংশ নামই শুনেন নাই অনেকে। যার কারনে হয়তো তারা বিটকয়েন ছাড়া অন্য কোন ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে বলে জানেনই না। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন কয়েন মার্কেটে যোগ হয়। এর এই সব কয়েন গুলোর প্রায় সবই একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে মার্কেটে আসে। আর সেই প্রক্রিয়া গুলোই হচ্ছে ICO, Private Sale, Bounty এবং Airdrop।

Private Sale কি?

প্রাইভেট কথাটি দেখার পর নিশ্চয় ধারনা পেয়ে গেছেন। জি হ্যাঁ, নতুন কোন কয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সি যখন মার্কেটে আসে তার পূর্বে তারা তাদের কয়েন বা টোকেন গুলো প্রাইভেটলি বিক্রয় করে থাকে। Private Sale এর বিস্তারিত আলোচনার পূর্বে কিছু কথা না বললেই নই। প্রথমত, যে ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো মার্কেটে আসে তা কোন কম্পানির মাধ্যমে। অর্থাৎ কোন প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান বা নতুন কোন প্রতিষ্ঠান কোন একটি কন্‌স্পেট নিয়ে এই ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো নিয়ে আসে। যখন এই ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো মার্কেটে আসার জন্য কাজ করে, তখন সেই ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলোকে কয়েন বা টোকেন বলা হয়ে থাকে। আর যেহেতু এই টোকেন গুলো একেকটি কম্পানির নিজস্ব কন্‌স্পেট নিয়ে মার্কেটে নিয়ে আসার জন্য কাজ করা হয়, তাই সহজ কথায় এই গুলোকে একেকটি প্রজেক্ট বলা হয়ে থাকে।

এবার আসি Private Sale এর আলোচনায়। কম্পানি গুলো তাদের কন্‌স্পেট গুলোকে বাস্তবায়নের জন্য তাদের অনেক অর্থের প্রয়োজন। আর সেই অর্থের যোগান হিসেবে তারা ক্রিপ্টোগ্রাফিক টেকনোলজি ব্যবহার করেন। তারা এর মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট টোকেন জেনারেট করে; যা, প্রাইভেটলি বড় বড় ইনভেষ্টরদের কাছে তাদের টোকেন গুলো বিক্রয় করে। যেহেতু এই টোকেনগুলো প্রাইভেটলি বিক্রয় হয় তাই এই প্রক্রিয়াকে Private Sale বলা হয়। প্রাইভেটলি বলতে এই টোকেন বিক্রয়ের সময় তা তাদের ওয়েবসাইটে বিক্রয় সম্বন্ধে কোন ইনফো পাবলিশ করা হয় না। আবার কোন কোন প্রজেক্ট করে থাকে, তাদের নিজ নিজ পলেস অনুযায়ি। সে যাইহোক, আপনিও এই Private Sale এ অংশগ্রহন করতে পারেন। তবে এর জন্য একটু বড় ধরনের এমাউন্ট/ইনভেষ্ট প্রয়োজন। আপনার থেকে অর্থ গ্রহন করে তারা আপনাকে তাদের তৈরি করা টোকেন দিয়ে থাকবে, এবং সেই টোকেন গুলোর একটি নির্দিষ্ট দাম নির্ধারন করা হয়ে থাকে।

আপনি কেন Private Sale এ অংশগ্রহন করবেন?

টোটাল টোকেন বিক্রয়ের জন্য যা নির্ধারন করা হয় তার খুব কম পারসেন্টেজ Private Sale এর মাধ্যমে বিক্রয়ের জন্য নির্ধারন করা হয়, এবং তার দাম ICO এর চাইতে একটু কম রাখা হয়। যার কারনে সেই টোকেনটি যখন মার্কেটে কেনা-বেচার জন্য প্রবেশ করে তখন একটু ভাল প্রফিট হবার সম্ভাবনা থাকে। আর এই কারণে যারা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ইন্‌ভেষ্ট করে থাকেন তারা Private Sale এ ইন্‌ভেষ্ট করতে আগ্রহী থাকেন। যদিও সকলের পক্ষে এখানে ইন্‌ভেষ্ট করা সম্ভব হয় না, দাম এবং অল্প সংখ্যক ইন্‌ভেষ্টর গ্রহন করার কারণে।

ICO কি?

প্রাইভেট সেল এর মতই এখানেও টোকেন সেল করা হয়, কিন্তু তা বিশদ আকারে। এখানে অধিকাংশ ইন্‌ভেষ্টর সুযোগ পান এবং ইন্‌ভেষ্টের জন্য বড় এমাউন্ট প্রয়োজন হয় না। ICO এর পূর্ণ রূপ Initial Coin Offer এটিকে বর্তমানে বিভিন্ন কম্পানি বিভিন্ন ভাবে বলে থাকে; যেমন- ITO – Initial Token Offer, TGE – Token Generate Event ইত্যাদি। ICO তে Private Sale এর তুলনাই দাম একটু বেশি হয়। অনেক কম্পানি ICO এবং Private Sale অংশগ্রহন করার জন্য আপনার Identification ডকুমেন্টস্‌ চেয়ে থাকবে। আর সেই ডকুমন্টেস্‌ ভ্যরিফাই হলেই আপনি তাদের ICO বা Private Sale এ অংশগ্রহন করতে পারবেন।

Bounty কি?

যেসব কম্পানি কোন ICO বা Private Sale অনুষ্টিত করার মাধ্যমে মার্কেটে আসতে চাই, তারা তাদের প্রজেক্টকে সকল ইনভেষ্টরদের দৃষ্টিগোচর করার জন্য Bounty নামের একটি প্রগ্রাম চালিয়ে থাকে। বিষয়টি সহজ করে বলতে হলে ছোট্ট একটি উদাহরন দেয়- মনে করেন আপনি কোন একটি কম্পানির মালিক এবং আপনি কোন একটি প্রোডাক্ট বাজার আনতে চান। এখন আপনি প্রোডাক্টটি হুট করে তো আর বাজারে ছাড়বেন না। কারন আপনি হুট করে বাজারে নতুন কোন প্রোডাক্ট নিয়ে আসলে কেউ তা কেনার জন্য খোজ করবে না, তার সহজ কারন আপনার প্রোডাক্টির সাথে কেউ পরিচতই না। আর তাই আপনার প্রোডাক্টির পরিচিতির জন্য আপনি নিশ্চয় বেশ কিছু ব্যক্তি বা এ্যড কম্পানির মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্টির এ্যড করবেন। আর এই এ্যড করার জন্য আপনি কিছু অর্থ খরচ করবেন। আপনি যে খরচ করে আপনার প্রোডাক্টির এ্যড করবেন এটাকেই বলা হচ্ছে Bounty । যা আমাদের সহজ কথাই মার্কেটিং।

সাধারন মার্কেটিং আর Bounty এর মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। আর তা হল সচারচার যে এ্যড দিয়ে আমরা যে মার্কেটিং দেখি তা করার জন্য কম্পানি গুলো ক্যশ টাকা খরচ করে থাকে। কিন্তু টোকেন কম্পানি গুলো Bounty চালান তাদেরই সেই টোকেন গুলোই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। অর্থাৎ যারা তাদের Bounty তে অংশগ্রহন করেন তারা সাথে সাথেই তাদের পারিশ্রমিক পান না। যখন কম্পানিগুলো Private Sale এবং ICO শেষ করবে তারপর সেই সকল ব্যক্তিদের পেমেন্ট করা হবে যারা তাদের Bounty তে অংশগ্রহন করেছিলেন। এবং তাদের পারিশ্রমিক সেই প্রোজেক্টেরই টোকেন দ্বারা পরিশোধ করা হবে। Bounty করে ভাল একটা আয় করা যায়। এই নিয়ে খুব শীঘ্রয় একটি পোষ্ট করবো বলে আশা রাখি।

Airdrop কি?

Airdrop এর মাধ্যমেও কিছু টোকেন আয় করা সম্ভভ। Airdrop তেমন কোন জটিল কাজ নই। যার কারনে এর মাধ্যমে বেশি আয় করাও সম্ভব না। তবে “নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল” তা তো সবাই জানি, আর যেহেতু Airdrop এ অংশগ্রহন করার জন্য বেশি খাটা-খাটনিও করা লাগে না। তাই Airdrop এ অংশগ্রহন করাই যায়। Airdrop এর কাজ গুলো হলো; তাদের ফ্যানপেজ যেমন- তাদের প্রোজেক্টের ফেসবুক পেজ, টুইটার পেজ, ইউটিউব, লিংকেডইন ইত্যাদি সোসাল সাইট গুলো ফলো করতে বলে। এতটুকু করেই; তার প্র্রুফ হিসেবে আপনার ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির প্রফাইল লিংক চাইবে। ব্যশ হয়ে গেল আপনার Airdrop অংশগ্রহন।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *